পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, গত ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ৩৩তম বর্ষপূর্তির দিনই মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় একই নামে নতুন একটি মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। এই ঘটনার ব্যাপক আলোচনা এবং সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। অনুষ্ঠানমঞ্চে হুমায়ুন কবীর ঘোষণা দেন, এক গোপন শিল্পপতি একটি অনুদান হিসেবে ৮০ কোটি টাকা দেবেন এই মসজিদের নির্মাণের জন্য। তিনি আরও জানান, বাবরি মসজিদ পুনর্নির্মানের জন্য প্রাক্কলিত খরচা প্রায় ৩০০ কোটি টাকা, যা সম্পূর্ণ মুসলিম সমাজের দানের মাধ্যমে সংগৃহীত হবে। হুমায়ুন কবীর স্পষ্ট করে বলেন, তিনি সরকারের কাছ থেকে কোন টাকা নেবেন না, কারণ এতে মসজিদের পবিত্রতা নষ্ট হতে পারে। তিনি আরও জানান, ওই শিল্পপতি তার নাম প্রকাশ করতে অস্বীকার করেছেন, তবে তিনি আগামী এক মাসের মধ্যে ৮০ কোটি টাকা দিতে প্রস্তুত। বর্তমানে তার কাছে ২৫ বিঘা জমি রয়েছে, যেখানে তিনি পরিকল্পনা করছেন না শুধুমাত্র মসজিদ, বরং একটি ইসলামিক হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয়, হেলিপ্যাড এবং মুসাফিরখানা নির্মাণের। বাবরি মসজিদ পুনঃনির্মাণের এই ঘোষণা ও দলীয় মতের বিরোধী মন্তব্যের কারণে হুমায়ুন কবীরকে তৃণমূল কংগ্রেস থেকে অস্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আসন্ন নির্বাচনের আগে এই উদ্যোগ দলকে বেশ কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে ফেলতে পারে। ১৯৯২ সালে ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় অযোধ্যায় উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের হামলায় ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ধ্বংস হয়, যা বহু বছর ধরে হিন্দু-মুসলিম দলের মধ্যে বিবাদের কারণ। সেই ঘটনার বর্ষপূর্তির দিনে মুর্শিদাবাদের এই নতুন মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছিলেন হুমায়ুন কবীর, যা নানা বিতর্কের সৃষ্টি করে। পুলিশের কঠোর নিরাপত্তায় এই অনুষ্ঠানে সবার আগে ফিতা কেটে ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন তিনি। উপস্থিত মুসল্লিরা “নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার” স্লোগান দেন। তিনি বলেন, বাংলায় মুসলমানদের মসজিদ নির্মাণের অধিকার রয়েছে, এবং এই বিষয়টি কোনও রাজনৈতিক রোষানলে পড়বে না। তিনি আরও বলেন, প্রকল্পটি রাম মন্দিরের বিপরীতে দাঁড় করানোর জন্য নয়, বরং প্রয়োজন হলে সমালোচকদের উত্তপ্ত পরিস্থিতি আরও বাড়ানোর জন্য তুলে ধরা হচ্ছে। হুমায়ুন কবীর বলেন, বাংলা সব ধর্মের адамдарের জন্য শান্তিপূর্ণ ও সহনশীল স্থান, এবং কোনও ব্যক্তি বা বাহিনী যেন এই মসজিদ নির্মাণে বাঁধা না দেয়, সেটা তিনি দৃঢ়ভাবে বলছেন। তিনি সবাইকে আশ্বস্ত করেন, যেকোনো চাপ সত্ত্বেও এই মসজিদ নির্মাণ কাজ অটুট থাকবে।


















