ফুটবল বিশ্বে গত কয়েক মৌসুমে অপ্রচলিত মনে হওয়া মার্কিন লিগ এমএলএস এখন কীভাবে বদলে যেতে শুরু করেছে, তার অন্যতম কারণ হল লিওনেল মেসির আগমন। তার স্��র্শে রাতারাতি এসপুট স্পন্দিত হয়ে উঠেছে এই লিগের প্রতিযোগিতা। সম্প্রতি সেখানকার সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ট্রফি, এমএলএস কাপ, প্রথমবারের মতো জয়ী হয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে ইন্টার মায়ামি। এই সাফল্য মেসির জোড়া অ্যাসিস্টের কৃতিত্বে সম্ভব হয়েছে, যা দলের জন্য এক মহান অর্জন।
বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার ২০২২ সালে কাতার বিশ্বকাপ জিতে ক্যারিয়ারে এক বিশেষ অধ্যায় সম্পন্ন করেছেন। তারপরও পেশাদার ফুটবল চালিয়ে যেতে হবে, এই চ্যালেঞ্জ তিনি গ্রহণ করেছেন। সেই চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে, রীতিমতো আনকোরা দলের মধ্যেও এক নতুন জয়ের স্বপ্ন দেখাতে থাকেন মেসি। দল গঠনে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন সাধিত হয়েছে, যেখানে মূল প্রেরণা ছিলেন মেসি নিজেই। রদ্রিগো ডি পলের মতো খেলোয়াড়দের দলে আনা, বুসকেটস, সুয়ারেজের উপস্থিতি—সবই ছিল দলের সাম্প্রতিক সফলতার মূল ভিত্তি।
দলের সাথে একসঙ্গে অনেক ট্রফি জয় করেছেন মেসি। এবার তিনি এমএলএস কাপে নিজের জয়ের সংখ্যাও ৪৮–এ নিয়ে গেছেন। এই কাপের ফাইনাল ম্যাচটি দুই কনফারেন্সের শীর্ষ দলগুলির মুখোমুখি হয়। উদ্বোধনী থেকে শুরু করে, শীর্ষে থাকা মায়ামি ইস্টার্ন কনফারেন্সের ট্রফি জিতেছে। এর মাধ্যমে তারা পুরো এমএলএসের শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট মাথায় তুলে নিয়েছে। গত শনিবার ফোর্ট লডারডেল-এর চেজ স্টেডিয়ামে এই ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে মায়ামি ও ভ্যাঙ্কুভার সমান লড়াই করেছে।
ম্যাচের প্রথমার্ধে মাত্র ৮ মিনিটের মধ্যেই এডিয়ার ওকাম্পোর আত্মঘাতী গোলে পিছিয়ে পড়ে ভ্যাঙ্কুভার। এরপর তাদের জন্য ম্যাচে ফিরে আসার জন্য অপেক্ষা করতে হয় ৬০ মিনিট পর্যন্ত। আলি আহমেদের গোল তাদের অনুপ্রেরণা যোগায়, তবে পরবর্তী সময়ে রদ্রিগো ডি পলের গোল লিড প্রদান করে মায়ামিকে। শেষমেষ, যোগ করা সময়ে তাদেও আলেন্দের গোল ম্যাচের জয় নিশ্চিত করে।
মেসি দুটি গোলের পাশাপাশি অ্যাসিস্টও করেছেন, যা এই জয়ের মূল চাবিকাঠি। এই জয়ের কৃতিত্বকে স্মরণ করে মেসি বলেন, ‘গত বছর আমাদের জন্য মৌসুমটা খুব হতাশাজনক ছিল, শুরুতেই বিদায় নিতে হয়েছিল। তবে এই বছর আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল এমএলএস জয়। দল শ্রম ও পরিশ্রমের মাধ্যমে এ লক্ষ্য সফল করেছে। বছরটি ছিল অনেক দীর্ঘ, অনেক ম্যাচ খেলতে হয়েছে, কিন্তু চূড়ান্তভাবে আমরা সফল।’
১২ বছর আগে ডেভিড বেকহ্যাম দলটির মালিকানা গ্রহণের পর, ২০২০ সালে খেলোয়াড় হিসেবে দলটির যাত্রা শুরু হয়। তিন বছর পর মেসি যোগ দেন, আর তখন থেকেই দলটির ভাগ্য বদলে যেতে শুরু করে। বেকহ্যাম বলেন, ‘এটা এক অবিশ্বাস্য যাত্রা। মেসি শুধু উপভোগ করতে আসেনি, তার পরিবারও এই শহরকে ভালোবাসে। তবে তার আসলে জেতারই মনোভাব ছিল। সে সবসময় দলের প্রতি আন্তরিক ও নিবেদিত। লিও একজন প্রকৃত বিজয়ী।’


















