রমনা মডেল থানার সন্ত্রাস বিরোধী আইনের এক মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন বাংলাদেশের সাবেক প্রেস ক্লাব সভাপতি ও জনতা পার্টির মহাসচিব শওকত মাহমুদ। এ মামলায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।আজ বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফাহমিদা খন্দকার আন্না এই আদেশ দেন।আসামি শওকত মাহমুদকে অন্তর্বর্তী সরকার পতনের জন্য অন্য দেশের এজেন্ট হিসেবে কাজ করার অভিযোগে গত রোববার গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন স্থানে গোপনে সভা-সমাবেশ করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার অভিযোগ আসে। গ্রেপ্তারকালে মালিবাগের একটি প্রাইভেট কার থেকে তাকে আটক করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেপ্তারের পরদিন, সোমবার, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির রমনা জোনের পরিদর্শক আখতার মোর্শেদ তাকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। তবে, মূল মামলার নথিপত্র না থাকায় সেই দিন রিমান্ডের শুনানি হয়নি। বৃহস্পতিবার তার রিমান্ডের শুনানির জন্য দিন ধার্য করা হয় এবং তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।আবেদনে অভিযোগ করা হয়, শওকত মাহমুদসহ অন্যান্য অজ্ঞাত আসামিরা দেশের অখণ্ডতা, সংহতি ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার জন্য একত্রিত হয়ে বিভিন্ন সময় জনসাধারণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করছেন। তারা বর্তমান সরকারকে উৎখাত করার জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, উচ্চপদস্থ ব্যক্তি ও ব্যবসায়ী মহলের সঙ্গে গোপনে সভা-সমাবেশ করছে।আরও বলা হয়, আসামিরা যোগসাজশে দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করে তোলার জন্য বিভিন্ন গোপন শলাপরামর্শ করছে। এ নেপথ্যে তারা কোনও কোনও দল বা সংগঠনের সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ করে বলেও অভিযোগ।গত ১৩ সেপ্টেম্বর সকালে, মিন্টো রোডের মন্ত্রীপাড়ায় সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরি করছিলেন বাংলাদেশের বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক এনায়েত করিম চৌধুরী। পুলিশ তাকে থামানো, জিজ্ঞাসাবাদ ও গ্রেপ্তার করে। তার কাছে থাকা দুটি আইফোন বিশ্লেষণে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও ষড়যন্ত্রের সূচনা পাওয়া যায়। তিনি নিজেকে জানান, তিনি একজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক এবং বিশেষ দেশের গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট। তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার খুব নাজুক অবস্থায় রয়েছে। তিনি দেশটিতে এক নতুন জাতীয় সরকার বা তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের জন্য কাজ করছেন বলে দাবি করেন। এনায়েত জানান, তিনি নিউইয়র্ক থেকে ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকায় এসেছেন এবং গোপনে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতা ও ব্যবসায়ী মহলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তিনি বলেন, মার্কিন সরকার এই সরকারের পরিবর্তনে অর্থায়ন ও প্রভাব বিস্তার করছে।তার অভিযোগ, তারা আসছে ২১ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের রায় বাতিলের পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য অপেক্ষা করছে, যাতে নতুন তত্ত্বাবধায়ক বা সেনা সমর্থিত সরকার গঠিত হয়। এই সরকার গঠনে আমেরিকা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেবে।তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির ওপর নজরদারি চালাচ্ছেন এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের তথ্য সংগ্রহ করে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কাছে হস্তান্তর করছেন।অভিযোগের ভিত্তিতে বলা হয়, এনায়েত করিম চৌধুরী বাংলাদেশে এসে দেশের সার্বভৌমত্ব ও জননিরাপত্তা বিনষ্টের জন্য অন্য দেশের গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট হিসেবে কাজ করছেন—এমন গুরুতর অপরাধে লিপ্ত।রমনা মডেল থানায় এই মামলার দায়ের করেন পুলিশ উপ-পরিদর্শক আজিজুল হাকিম।সঙ্গে যুক্ত হওয়া তার সহযোগী এসএম গোলাম মোস্তফা আজাদ, জাতীয় পার্টির রওশনপন্থি মহাসচিব কাজী মো. মামুনুর রশীদ, সাংবাদিক মো. আজহার আলী সরকার ও যুব সংহতির যুগ্ম মহাসচিব রিফাতুল ইসলাম পাভেলকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়।






















