দেশের ব্যাংক খাতের কোটিপতি গ্রাহকের সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। চলতি বছরের মার্চ মাসের তুলনায় জুনে এই সংখ্যা বেড়ে হয়েছিল ৫ হাজার ৯৭৪টি। এরপর গত তিন মাসে আরো ৭৩৪টি নতুন কোটিপতি অ্যাকাউন্ট যুক্ত হয়েছে। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে, কোটিপতি অ্যাকাউন্টের পাশাপাশি জমা অর্থের মোট পরিমাণ কমে গেছে। রোববার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে জানা গেছে, জুন শেষে ব্যাংকিং সেক্টরে মোট অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ছিল ১৬ কোটি ৯০ লাখ ২ হাজার ৬৭১টি। সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ এটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ কোটি ৪৫ লাখ ৯৬ হাজার ৭০০টিতে। অর্থাৎ, এই তিন মাসে নতুন করে ৫৫ লাখ ৯৪ হাজার ২৯টি অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। একই সময়ে ব্যাংকগুলোর আমানতের মোট পরিমাণও কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। জুনে আমানতের পরিমাণ ছিল ১৯ লাখ ৯৬ হাজার ৫৮৩ কোটি টাকা, যা সেপ্টেম্বরের মধ্যে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৩১ হাজার ১১৯ কোটি টাকায়। এর ফলে, এই তিন মাসে মোট আমানত বেড়েছে ৩৪ হাজার ৫৩৬ কোটি টাকা। কোটিপতি অ্যাকাউন্টের প্রবৃদ্ধি বিষয়ে দেখা গেছে, জুন মাসে এই ধরণের অ্যাকাউন্ট ছিল ১ লাখ ২৭ হাজার ৩৩৬টি। তবে September এর শেষে তা বেড়ে হয়েছে ১ লাখ ২৮ হাজার ৭০টি, অর্থাৎ তিন মাসে কোটিপতি অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বেড়েছে ৭৩৪টির মতো। মার্চে এই সংখ্যা ছিল ১ লাখ ২১ হাজার ৩৬২টিই। কোটিপতি অ্যাকাউন্টের জমা অর্থের পরিমাণ শুরুতে ছিল ৮ লাখ ৮০ হাজার ৭৭২ কোটি টাকা, যা সেপ্টেম্বরের মধ্যে কমে দাঁড়িয়েছে ৮ লাখ ২১ হাজার ৫৬২ কোটি টাকায়, অর্থাৎ তিন মাসে কমেছে ৫৯ হাজার ২০৯ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা মন্তব্য করেছেন, কোটিপতি হিসাব মানে শুধুমাত্র ব্যক্তির কোটিপতি নয়। একটি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ব্যক্তি ছাড়াও অনেক বেসরকারি, সরকারি ও কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান এই ধরনের অ্যাকাউন্ট রাখে। একই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের একাধিক অ্যাকাউন্টও থাকতে পারে। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোও এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য বলছে, ১৯৭২ সালে কোটিপতি আমানতকারী ছিল মাত্র ৫ জন। পরবর্তীতে ১৯৭৫ সালে সংখ্যা বেড়ে হয় ৪৭, ১৯৮০ সালে ৯৮, ১৯৯০ সালে ৯৪৩, ১৯৯৬ সালে ২ হাজার ৫৯৪, ২০০১ সালে ৫ হাজার ১৬২, ২০০৬ সালে ৮ হাজার ৮৮৭ এবং ২০০৮ সালে তা পৌঁছেছিল ১৯ হাজার ১৬৩-এ। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই সংখ্যায় আরও বৃদ্ধি দেখা গেছে। ২০২০ সালে কোটিপতি অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ছিল ৯৩ হাজার ৮৯০, ২০২১ সালে বেড়ে হয় এক লাখ ৯ হাজার ৭৬, ২০২২ সালে ১ লাখ ৯ হাজার ৯৪৬, ২০২৩ সালে ১ লাখ ১৬ হাজার ৯০৮ এবং ২০২৪ সালে এই সংখ্যাটি দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২১ হাজার ৩৬২ টি।






















