বিদেশে পাচার করা অর্থ উদ্ধার ও প্রভাবিত সম্পদগুলোর বিষয়ে সরকার কঠোর অবস্থান নিয়েছে। দেশের মধ্যে ও বিদেশে মোট ৬৬ হাজার ১৪৬ কোটি টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ সংযুক্ত ও অবরুদ্ধ করা হয়েছে। এর মধ্যে বিদেশে পাচার করা অর্থের মাত্র ৫৫ হাজার ৬৩৮ কোটি টাকার সম্পদ উদ্ধার এবং সংযুক্ত করা হয়, যেখানে আরও ১০ হাজার ৫০৮ কোটি টাকার সম্পদ। এই তথ্য সোমবার অনুষ্ঠিত জাতীয় সমন্বয় কমিটির সভা শেষে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়। মূল লক্ষ্য হলো মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়নের মত অপরাধগুলোর বিরুদ্ধে কার্যকরিতাকে আরও শক্তিশালী করা, এবং এ জন্য বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা ও নীতি প্রণয়ন করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। এসময় বক্তারা নির্ধারিত আইন, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর কিছু ধারা যুগোপযোগী করে সংশোধনের সিদ্ধান্ত নেন, যাতে কার্যকারিতা আরও বৃদ্ধি পায়। এ ছাড়া, বিদেশে পাচার করা অর্থ ও সম্পদ উদ্ধারে অগ্রাধিকারভিত্তিক ১১টি কেসের ওপর নজরদারি ও তদন্ত কার্যক্রমের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়। ইতিমধ্যে, এই কেসগুলোতে ১০৪টি মামলা দায়ের, ১৪টিতে চার্জশিট দাখিল এবং ৪টি মামলায় রায় দেওয়া হয়েছে। সরকার আরও বলেছে, দেশে এবং বিদেশে সংযুক্ত সম্পদগুলো গণনা করে দেখানো হয়েছে, যেখানে দেশে ৫৫ হাজার ৬৩৮ কোটি টাকার সম্পত্তি এবং বিদেশে ১০ হাজার ৫০৮ কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে। সর্বমোট এই দুটি ক্ষেত্রের সম্পদই ৬৬ হাজার ১৪৬ কোটি টাকার। এছাড়া অতি দ্রুত অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মামলা নিষ্পত্তির লক্ষ্যে কর্মাকর্তা ও দেশের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে, বাংলাদেশ এখন ভবিষ্যতে মানিলন্ডারিং ও অর্থপাচারে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে আরও দৃঢ়ভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ, যার মূল্যায়ন করছে এশিয়া প্যাসিফিক গ্র“প অন মানিলন্ডারিং (এপিজি)। আগামী ২০২৭-২০২৮ মেয়াদে এপিজি পরিচালিত মিউচুয়াল ইভ্যালুয়েশন সম্পন্ন হবে, যা বাংলাদেশের উন্নত মানদণ্ডে যাওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সভায় উপস্থিত ছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ সচিব, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, ন্যাশনাল ট্যাক্স বোর্ডের চেয়ারম্যান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, অন্যান্য দপ্তরের প্রতিনিধিরা, এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলোর কর্মকর্তা। সব মিলিয়ে, এই সভার লক্ষ্য হলো অর্থপাচার ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং দেশের অর্থনৈতিক নিরাপত্তাকে আরও সুদৃঢ় করে তোলা।









