মহানগর বিএনপি’র সভাপতি এড. শফিকুল আলম মনা বলেছেন, শহীদ হাদির নির্মম মৃত্যুর শোক এখনও দাগ কেটে গেছে পুরো জাতির হৃদয়ে। যখন পুরো দেশ শোকের মাতলামিতে আপ্লুত, মসজিদে-মসজিদে তার আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া চলছিল, তখনই দেশের বিভিন্ন স্থানে দেখা দিল অমানবিক সহিংসতার নির্মম চেহারা। দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যম—ডেইলি স্টার, প্রথম আলোসহ অন্যরা, এবং বরেণ্য সাংবাদিক নূরুল কবীরসহ অনেকেই আক্রান্ত হন কাপুরুষোচিত হামলার ক্ষতচিহ্নে। এসব ঘটনায় গভীর ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন খুলনা মহানগর বিএনপির নেতৃবৃন্দ। তারা বলেন, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ, কিন্তু আজ আমাদের দেশের নাগরিকের জানমালের নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে। একজন শহীদের রক্ত শুকায়নি, তার পরিবারের কান্না থামেনি, আর সেই মুহূর্তে আবারও সংঘটিত হলো সহিংসতা। এই হত্যাকাণ্ড ও সহিংসতা জাতির বিবেককে রক্তাক্ত করেছে। যারা দুঃখ, শোক ও সংকটের সময়ে এই দেশের দুর্বলতা লক্ষ্য করে অপকৌশলে কাজ করে, তারা এই দেশের শত্রু। শোককে শক্তিতে রূপান্তর না করে যারা ধ্বংসের পথে হাঁটছে, তারা রাষ্ট্র ও সমাজের জন্য বড় হুমকি। শহীদ হাদির শাহাদাতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরিকল্পিতভাবে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালানো বর্তমান সরকারের অসম্মানজনক ব্যর্থতা।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায়, দীর্ঘ ১৮ বছর নির্বাসিত জীবন শেষে আগামী ২৫ ডিসেম্বর বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিনে ঢাকায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে মহানগর বিএনপি। এ জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে এড. শফিকুল আলম বলেন, শহীদ হাদির কেবল একজন প্রার্থী ছিলেন না, তিনি ছিলেন মানুষের কণ্ঠস্বর, জনগণের আশা ও পরিবর্তনের প্রতীক। তার হত্যার বিচার এখন আর কেবল রাজনৈতিক দাবি নয়, এটি একটি নৈতিক অপরাধ। সেই সাথে, সব দোষী ও সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
বক্তারা আরো বলেন, স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকার পতনের পর, দেশের সামনে সবচেয়ে বড় দায়িত্ব হলো ছিন্নভিন্ন জাতিকে পুনরায় একসঙ্গে গাঁথা। একজন গণতান্ত্রিক, স্থিতিশীল ও মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হলে ব্যাপকভাবে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের নিরাপত্তা এবং নাগরিক অধিকার রক্ষা করতে হবে। এই_syÑরিপ্ত পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। রক্ত ও অশ্রুর রাজনীতি বন্ধের জন্য সবাইকে আহবান জানানো হয়। যারা এই সংকটের মুহূর্তে ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, তারা লক্ষ্য করে স্ট্রাটেজিক আলামত। এমন পরিকল্পিত সন্ত্রাসের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়, যারা এই ধরনের আক্রমণ ও উসকানিতে জড়িত, তাদের মুখোশ খুলে দেওয়ার দাবি জানানো হয়। শহীদ হাদির মতো নেতৃ natureমূলক হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সবাইকে একত্রে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
সভায় নগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিনের নেতৃত্বে বক্তব্য দেন সংগঠনের অন্যান্য নেতারা, যেমন মাসুদ পারভেজ বাবু, চৌধুরী হাসানুর রশিদ মিরাজ, কেএম হুমায়ুন কবীর, অনেকে। অংশ নেয়েন বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের প্রধানরা, নেতাকর্মী, যুবদল, মহিলা দল, ছাত্রদল ও শ্রমিক সংগঠনের নেতারা। সভার উদ্দেশ্য ছিল, আগামী ২৫ ডিসেম্বরের আগে ঢাকায় ১০ হাজার নেতাকর্মী বাস, ট্রেন বা ব্যক্তিগত যানবাহনে করে পৌঁছানোর প্রস্তুতি গ্রহণ। এই পরিকল্পনা শেষে সভায় সম্মতিপত্রে সকলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যে কোন ধরনের সহিংসতা ও উসকানির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করার অঙ্গীকার নেওয়া হয়। এনিয়ে সকলের মধ্যে একাগ্রতা ও ঐক্য বজায় রাখতে সব নেতাকর্মীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়।






















