লক্ষ্য ছিল যুব এশিয়া কাপের তৃতীয় শিরোপা জেতা। গ্রুপ পর্বে অপরাজিত থেকে সেই স্বপ্নের পথে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল বেশ ভালোই এগোছিল। কিন্তু সেমিফাইনালের মঞ্চে এসে সব কিছু তালপাতার মতো এলোমেলো হয়ে গেল। বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ব্যাটারদের ব্যর্থতা ও পাকিস্তানের দাপুটে পারফরম্যান্সের কারণে বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের দৌড় থেমে গেল ৮ উইকেটের বড় ধরনের হারে। এই হারে টানা তৃতীয় শিরোপার স্বপ্নভঙ্গের পাশাপাশি তারা দুবাই সফর থেকে ফিরতে হচ্ছে খালি হাতে।
শুক্রবার দুবাইয়ে বৃষ্টির কারণে নির্ধারিত সময়ের প্রায় চার ঘণ্টা পরে খেলা শুরু হয়। নির্ধারিত ২৭ ওভারে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা ব্যাট করতে নামলে মাত্র ১২১ রানে অলআউট হয় তারা। জবাবে পাকিস্তানের তরুণ ব্যাটার সামির মিনহাসের ফিফটি ও দলীয় দাপুটে পারফরম্যান্সে ৬৩ বল বাকি থাকতে জয় নিশ্চিত করে দেশটি।
১২১ রানের ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে পাকিস্তানের শুরুটা কিছুটা অস্থিতিশীল ছিল। প্রথম ওভারেই ওপেনার হামজা জোহর ইকবাল হোসেন ইমনের বল ধরে ক্যাচ দিলে শূন্য রানে ফিরে যান। তবে এরপর দ্বিতীয় উইকেটে ৮৫ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশের বিপদ কিছুটা কমায় সামির মিনহাস ও উসমান খান জুনিয়র। এই জুটিই মূলত ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করে দেয়।
সামিউন বশির রাতুলের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে উসমান (২৭) প্যাভিলিয়নে ফিরে গেলেও দলকে আর কোনো বিপদে পড়তে দেননি মিনহাস। আহমেদ হুসাইনকে (১১*) সঙ্গে নিয়ে ধারাবাহিকতায় দলের জয় নিশ্চিত করেন তিনি। ৫৭ বলে ৬৯ রানে অপরাজিত থাকেন এই ব্যাটার।
এর আগে, টস হেরে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ শুরু থেকেই দোটাইতে থাকে। গ্রুপ পর্বে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করা ওপেনার জাওয়াদ আবরার এই দিনটি অবদান রাখতে পারেননি। দলের আরও দুজন ওপেনার রিফাত বেগ (১৪) ও জাওয়াদ (৯) প্রথমেই সাজঘরে চলে গেলে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশি দল।
অধিনায়ক আজিজুল হাকিম ও কালাম সিদ্দিকি কিছুটা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। দলের অর্ধশতক ছুঁইছুঁই সময়ে স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন আজিজুল, কিন্তু ১৩তম ওভারে পাকিস্তানি পাবম সুবহান হোসাইনের ঘূর্ণিতে বিপদে পড়ে যায় বাংলাদেশ। ওই ওভারের প্রথম বলে আজিজুল (২০) ও শেষ বলে কালামকে (৮) তুলে নেন সুবহান।
এরপর বাংলাদেশের ব্যাটিং ভেঙে পড়ে তাসের ঘরেমতো। ১৬তম ওভারে ৭৩ রানে ৬ উইকেট হারায় তারা। ৯৩ রানে ৭ উইকেট পতনের পর দলীয় স্কোর ১০০ পার করার বেশ শঙ্কা তৈরি হয়। তবে শেষের দিকে সামিউন বশির রাতুলের প্রতিরোধে কিছুটা সম্মানজনক স্কোর পায় বাংলাদেশ। সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মাঝে একপ্রান্ত ধরে থাকা রাতুল ৩৭ বলে ৩৩ রান করেন, যা দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তার এই লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ২৬.৩ ওভারে ১২১ রানে অলআউট হয়।
পাকিস্তানের বোলারদের মধ্যে আব্দুল সুবহান একাই ৪ উইকেট নেন, অন্যদিকে হুজাইফা আহসান দুটি উইকেট তুলে নেন। অপরদিকে, দিনের অন্য সেমিফাইনালে লড়ছে ভারত ও শ্রীলঙ্কা।




















