বিদেশে পাচার করা অর্থ ও সম্পদ স্বরাষ্ট্র, অর্থোপার্জন ও তা নিষ্কাশনের জন্য দেশের বিভিন্ন সম্পদ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সংযুক্ত ও অবরুদ্ধ করা হয়েছে। এই বহুমুখী প্রতিরোধ কার্যক্রমে গত বুধবার দেশে তথা বিদেশে মোট ৬৬ হাজার ১৪৬ কোটি টাকার সম্পদ সংযুক্ত ও অবরুদ্ধ করা হয়েছে। এর মধ্যে দেশের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ এরইমধ্যে ৫৫ হাজার ৬৩৮ কোটি টাকা এবং বিদেশে ১০ হাজার ৫০৮ কোটি টাকার সম্পদ রয়েছেন। এই তথ্য জানানো হয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুষ্ঠিত সাধারণ জাতীয় সমন্বয় কমিটির সভার শেষে। এই সভা মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা ও নীতিমালা প্রণয়নের জন্য করা হয়েছিল। সভাপতিত্ব করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, বিদেশে পাচারকৃত অর্থ ও সম্পদ দ্রুত উদ্ধার ও ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আইনটি আরও যুগোপযোগী করে সংশোধন করা হবে। এ ছাড়াও, পাচারকৃত অর্থ ও সম্পদ উদ্ধারে অগ্রাধিকারভিত্তিক ১১টি কেসের জন্য গঠিত যৌথ অনুসন্ধান ও তদন্ত দল বর্তমানে অগ্রগতি লাভ করছে। ইতোমধ্যে ১০৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে, আর ১৪টি মামলার চার্জশিট দাখিল এবং চারটি মামলার রায় পাস হয়েছে। দেশের মোট ৫৫ হাজার ৬৩৮ কোটি টাকা মূল্যসম্পন্ন স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধ হয় এবং বিদেশে এসব সম্পদের সঙ্গে আরো ১০ হাজার ৫০৮ কোটি টাকার সম্পদও সংযুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি, অগ্রাধিকার কেসগুলোর জন্য ২১টির MLAT (মাল্টিল্যাটারেল সমঝোতা চুক্তি) দেশের মধ্যে পাঠানো হয়েছে। সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, এসব কেস দ্রুত চার্জশিট দাখিল, MLAT প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা ও মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তি করার জন্য প্রশাসনিক ও আইনি কার্যক্রম ত্বরান্বিত করতে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন রোধে বাংলাদেশের অবস্থান মূল্যায়নের জন্য এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ অন মানিলন্ডারিং (APG) ২০২৭-২০২৮ মেয়াদে ৪র্থ পর্যায়ের মিউচুয়াল ইভ্যালুয়েশন সম্পন্ন হবে। সেই কারণে সব সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ এবং সংস্থাগুলোকে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সভায় উপস্থিত ছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ সচিব, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, সংসদ বিষয়ক সচিব, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দ্বিপাক্ষিক বিষয়ক সচিব, অতিরিক্ত এ্যাটর্নি জেনারেল, সিআইডির প্রধান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ পুলিশ ও বিএফআইইউ-এর প্রতিনিধিরা।






















