বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের জন্য তার আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। মাত্র দু’দিন পর তিনি দেশে ফিরছেন, যা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। ১৭ বছর পর এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে স্মরণীয় করে তোলার জন্য দলটি বিভিন্ন প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। দলের নেতারা সর্বোচ্চ জনসমাগম এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কারিগরি ও সামরিক প্রস্তুতিতে জোর দিয়েছেন। নিরাপত্তার জন্য সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সঙ্গে দলের নিজস্ব পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে। রাজধানীর ৩০০ ফুটের গণসংবর্ধনা মঞ্চ তৈরি শুরু হয়েছে, যাতে লক্ষাধিক মানুষ অংশ নিতে পারেন। বিএনপি নেতারা বলছেন, তারেক রহমানের স্বাগত জানাতে রাজধানীতে Estimated ২০ লাখ মানুষের সমাগম হবে। বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করেছেন এবং আগামী দিনগুলোতে উপস্থিতি আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। নিরাপত্তা বিধানে কঠোর নির্দেশনা জারি হয়েছে, যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। বিমানবন্দর থেকে ৩০০ ফুটের গণসংবর্ধনা স্থান ও গুলশান পর্যন্ত বড় ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বিমানবন্দরে তারেক রহমানের সঙ্গে থাকা দলের শীর্ষ নেতারা তাকে স্বাগত জানাবেন। সেই সঙ্গে, কি তিনি সরাসরি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেখতে যাবেন নাকি ৩০০ ফুটের গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি; তবে সম্ভবত তিনি আগে খালেদা জিয়াকে দেখতে হাসপাতাল যাবেন। তারেক রহমানের দেশে ফিরে আসার জন্য বিশেষ ট্রেন ও চাস্তা প্রস্তুত করা হয়েছে। সূত্র জানায়, তিনি ইতোমধ্যে ট্রাভেল পাস সংগ্রহ করেছেন। তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটটি ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে ঢাকায় রওনা হবে। আশা করা হচ্ছে, ২৫ ডিসেম্বর সকাল ১১:৪৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করবে। ফ্লাইটে থাকবেন তার পরিবারের সদস্যরা, যেমন তার স্ত্রী জোবাইদা রহমান ও কন্যা জাইমা রহমান, পাশাপাশি তার মিডিয়া টিমের কয়েকজন সদস্য। তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দলীয় নিরাপত্তা টিমের প্রধান হিসেবে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এ কে এম শামছুল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি নেতৃত্ব দেবেন সিকিউরিটি টিমের, যারা বিমানবন্দর থেকে গুলশান পর্যন্ত তার নিরাপত্তার সব দিক দেখভাল করবেন। বিষয়টি নিয়ে দলের সর্বোচ্চ নেতাকর্মীরা বেশ কয়েক দফা বৈঠক করেছেন। তাদের অংশীদারিত্বে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো জোরদার করা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকেও সতর্কতার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, তারেক রহমানের নিরাপত্তার জন্য কোনও বিশেষ ঝুঁকি এখনও স্পষ্ট নয়, তবে পরিস্থিতি অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তার দেশে ফেরার পর তার চলাফেরা পুলিশের পাহারায় থাকবে। বাসভবন ও অফিসেও থাকবে বেশ কয়েকটি নিরাপত্তা স্তর। কাউকে অনুমতি ছাড়াই তার ধারে কাছেও যেতে দেওয়া হবে না। গোয়েন্দা ও পুলিশ সদস্যরা সার্বক্ষণিক তার নিরাপত্তা দেখবেন। তারেক রহমানের জন্য মোতায়েন করা হয়েছে হাজারো পুলিশ সদস্য। আরও থাকবেন ঢাকা মহানগর পুলিশের সোয়াট দল, বেম ডিসপোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াডের সদস্যরা। তিনি বিশেষ করে জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত করবেন ও দেশের বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখার পরিকল্পনা রয়েছে। তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনের এই সময়ে প্রস্তুতিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, এর মধ্যে উপস্থিতির জন্য যেন কোন বিঘ্ন না ঘটে, সেদিকে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। বিএনপি নেতারা জানান, এই মুহূর্তে দেশের বিভিন্ন জেলায দলীয় নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করেছেন এবং মূল শহর ঢাকায় লাখ লাখ মানুষ অংশ নেবে। স্বেচ্ছাসেবক ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই অনুষ্ঠান স্মরণীয় করে তোলার পরিকল্পনা করেছেন। নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে সারাদেশ থেকে দলীয় সমর্থকদের সমাগম বাড়বে বলে আশা করা যাচ্ছে। এই ঐতিহাসিক কাজে জন্য প্রস্তুতি সুনির্দিষ্ট ও সুসংগঠিত।


















