২০২৬ সালের পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের পূর্বে ভোটার তালিকা সংশোধনের জন্য বিশেষ উদ্যোগের ঘোষণা আসার পর থেকেই রাজ্য রাজনীতিতে উত্তেজনা বেড়ে গেছে। এ পরিস্থিতির মাঝে সোমবার কলকাতার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূলের কর্মীসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও শক্ত ভাষায় হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। তিনি যেমন বলেছেন, ‘‘বাংলায় হাত দিলে দিল্লি আমরা কেড়ে নেব।’’ একদিকে তিনি বিজেপির উদ্দেশ্যে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘‘বিজেপি মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে, সো-called ‘টোটাল অটোক্র্যাসি’ চলছে। ইতিমধ্যেই ৪৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি হিন্দু।’’ মমতা অভিযোগ করেন, এএসআইআরের দীর্ঘ প্রক্রিয়া হলেও তা স্বল্প সময়ে কার্যকর করা হচ্ছে বলে জনমনে সন্দেহ বিরাজ করছে। তিনি পুরো প্রক্রিয়াটিকে ‘ব্লান্ডার’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘‘এটা পুরোপুরি অপ্রয়োজনীয়, পরিকল্পনা ছাড়া। বিজেপির মানসিকতা তাদের নিজের মতে সিদ্ধান্ত নেওয়া, যা সম্পূর্ণ অগোছালো।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বিজেপির দাবি তাদের আরও দেড় থেকে দুই কোটি নাম বদলাতে হবে।’’ বিজেপিকে চ্যালেঞ্জের মুখে তুলে মমতা সরাসরি বলেন, ‘‘বাংলায় জেলার লড়াই করুন, বাংলায় লড়াই করলে ওদের দিল্লিও কেড়ে নেব। চাইলে আমি নিজেও রেহাই দেব না, কিন্তু আমি শুধু মানুষের কথাই বলব।’’এছাড়া, ভোটার তালিকা সংশোধনের জন্য বাস্তবপ্রায় কাজ হলেও, এর কোনও প্রভাব ভোটের ফলাফলে পড়বে না বলে ঘোষণা দেন মমতা। তিনি অভিযোগ করেন, নির্বাচন কমিশন দিন দিন নির্দেশনা পাল্টে যাচ্ছে, ইতিমধ্যে অন্তত ২২ থেকে ২৪ বার নীতি পরিবর্তন হয়েছে। এর ফলে অবৈধ ভোটাররা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। তিনি দলীয় কর্মীদের নির্দেশ দেন, বাড়ি বাড়ি গিয়ে দেখবেন—বাদ পড়া ভোটাররা বাস্তবে আছেন কি না। যদি কোনও ভুল পাওয়া যায়, তাহলে তারা যেন যথাযথভাবে অভিযোগ জানাতে পারে, সে ব্যবস্থা নিতে হবে। ভুক্তভোগী ভোটারদের সহযোগিতা করতে দলীয় প্রতিনিধি, বিধায়ক ও কাউন্সিলরদের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিকে, এএসআইআরের খসড়া তালিকায় পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ৫৮ লাখ ভোটার বাদ গেছে বলে জানা গেছে। ফলে, এই প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে প্রাথমিকভাবে রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা-সমালোচনা চলতে থাকছে।


















