সংসদ ভবন এলাকা এখন মানুষের ঢলনে মোড়া। এখানে থেকে যতদূর চোখ যেতে দেখা যাচ্ছে, শুধু মানুষই মানুষ। তারা সবাই এসেছে নেত্রী খালেদা জিয়াকে শেষ বিদায় জানাতে। জীবনের শেষ মুহূর্তে তিনি শুধু বিএনপি ও দেশের মূল নেতা নয়, একই সঙ্গে মানুষের প্রিয় এক প্রতীক হয়ে উঠেছেন। এই জনস্রোত স্পষ্ট করে দিয়েছে—খালেদা জিয়ার জন্য দেশের মানুষ কেমন গভীর আবেগে ভাসছেন।
সারা দেশ থেকে মানুষ এখন রাজধানীতে এসে যেন তার শেষ বিদায়ে অংশ নিয়েছেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা এই জনসমুদ্রে প্রকৃতি যেনও এরই সঙ্গে সম্মতি জানাচ্ছে—প্রকৃতি নিজেও খালেদা জিয়াকে বিদায় জানাতে প্রস্তুত। গত কয়েকদিনের কনকনে ঠাণ্ডা ঢেকে গিয়েছিল শহর, কিন্তু আজ উঁচু সূর্যের ঝলকানি ও মিষ্টি রোদে একটু স্বস্তি ফিরে এসেছে আগত মানুষের মুখে।
দুপুর দেড়টার সময় সংসদ ভবনের আশপাশে, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ ও সংলগ্ন সড়কগুলো সবই মানুষের ঢলে ভরে গেছে। এই ঢল পৌঁছে গেছে ফার্মগেট এলাকাও।
খালেদা জিয়ার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে দুপুর ২টায়, যার পরে তাকে তার স্বামী জিয়াউর রহমানের পাশে সমাহিত করা হবে। এই শোকাবহ মুহূর্তে সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী আজ সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে এবং তিনদিনের রাষ্ট্রীয় শোকের কথা জানানো হয়েছে।
নিরাপত্তার কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে সকাল ১১টা ৪৮ মিনিটের দিকে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় খালেদা জিয়ার মরদেহ পৌঁছায়। এটি নিয়ে আসা হয় লাল-সবুজ পতাকায় মোড়ানো ফ্রিজার ভ্যানে, যা রাষ্ট্রীয় প্রোটোকে নিরাপদে বাহন করে নিয়ে এসেছে।
এর আগে, সকাল ১১টার দিকে গুলশানে অবস্থিত ছেলে তারেক রহমানের বাসা থেকে মরদেহ বহনকারী ফ্রিজার ভ্যানটি যাত্রা শুরু করে। এর আগে, রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার মরদেহ নেয়া হয়।
গতকাল রাতে, ভোর ৬টায়, চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮০ বছর বয়সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন খালেদা জিয়া। তিনি দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনি ও ডায়াবেটিসসহ নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। তার মৃত্যুতে মানুষের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে, আর দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মানুষ গভীর শ্রদ্ধাজ্ঞলি তাকে বিদায় জানাতে আসছেন।






















