৯ জানুয়ারিতে একজন ব্যাংকারকে মারধর এবং ১৫ জানুয়ারি ডিএসসিসির পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তাকে ছিনতাইকারী সন্দেহে নির্যাতন করার অভিযোগে পুলিশের বিরুদ্ধে যখন নানামুখী সমালোচনা চলছে, তখন একটি ছোট খবর হয়তো আমাদের অনেকেরই দৃষ্টি এড়িয়ে গেছে। খবরটির শিরোনাম ‘শ্রেষ্ঠ এসআই’। বিশাল বাংলা পাতায় ‘সংক্ষেপ’ সংবাদ হিসেবে খবরটি ছাপা হয়েছে। পাবনা জেলার শ্রেষ্ঠ এসআই (উপপরিদর্শক) হিসেবে পুরস্কার পেয়েছেন ঈশ্বরদী থানার এসআই আবদুর রহিম। এই পুলিশ কর্মকর্তা বাহিনীর অন্য সদস্যদের অনুপ্রেরণা হয়ে উঠুক।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল, আসামি গ্রেপ্তার, মাদকদ্রব্য উদ্ধারসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় এলাকায় বিশেষ দায়িত্ব পালন করার কারণে আবদুর রহিমকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। পুলিশ বা এই বাহিনীকে বিশ্বের সর্বত্র জনগণের ‘বন্ধু’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, কারণ যেকোনো বিপদ-আপদে মানুষ প্রথম পুলিশ বাহিনীরই শরণাপন্ন হয়। বলা যায়, রাষ্ট্রের পক্ষে জনসাধারণের জীবনে সব থেকে প্রত্যক্ষ ভূমিকা পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান হলো পুলিশ। জনগণের আস্থাই এই বাহিনীর সাফল্য ও ব্যর্থতার নির্ণায়ক।
এই বাহিনীতে আবদুর রহিমের মতো নিষ্ঠাবান পুলিশ সদস্য যেমন রয়েছেন, তেমনি রয়েছেন এমন অনেকে, যাঁদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন, চাঁদাবাজি ও দুর্বৃত্তপনার মতো গুরুতর অভিযোগও ওঠে। পুলিশ বাহিনীর মান–মর্যাদা ও একে জনগণের ‘বন্ধু’ হিসেবে টিকিয়ে রাখার জন্য তাই আবদুর রহিমদের যেমন পুরস্কৃত করতে হবে, উৎসাহিত করতে হবে, তেমনি নির্যাতন বা চাঁদাবাজির মতো দুর্বৃত্তপনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তি নিশ্চিত করা জরুরি।
পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তির সমস্যা ও আস্থার সংকটের পেছনে যে কারণটি দীর্ঘদিন ধরে আলোচিত হয়ে আসছে, তা হচ্ছে বাহিনীটির রাজনৈতিক ব্যবহার। একটি পেশাদার ও জনগণের আস্থাভাজন বাহিনী হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে এটাই বড় বাধা। সরকারের নীতিনির্ধারক ও পুলিশের কর্তাব্যক্তিদের এ বিষয়ে বোধোদয় জরুরি। রাজনৈতিক বিবেচনা ও হিসাব-নিকাশের ঊর্ধ্বে উঠে সৎ ও যোগ্য সদস্যদের পুরস্কৃত ও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে বাহিনীর নিজের স্বার্থেই।