বিএনপির স্থায়ী কমিটির সঙ্গে শনিবার রাতে বৈঠকে বসছেন দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। গুলশানে তার রাজনৈতিক কার্যালয়ে শনিবার রাত সাড়ে ৮টায় বৈঠকটি শুরু হবে। এ বৈঠকে বিএনপির কাউন্সিলের সময়সীমা নির্ধারণ ও পৌরসভা নির্বাচনের ফল পর্যালোচনা এবং মার্চের শেষ সপ্তাহে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হতে পারে। বাংলা ট্রিবিউনকে বৈঠকের সম্ভাব্য প্রসঙ্গ সম্পর্কে ধারণা দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটি, উপদেষ্টা কমিটি ও নির্বাহী কমিটির কয়েকজন সদস্য।
এদিকে আগামী মার্চের মধ্যেই কেন্দ্রীয় কাউন্সিল সম্পন্ন করার চিন্তা রয়েছে বিএনপির। সরকারের মনোভাব, মামলা, গ্রেফতার এসব বিষয় মাথায় রেখে কাউন্সিলের ধরন বড় আকারে না হয়ে ঘরোয়াভাবে হতে পারে। পাশাপাশি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকেই পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব দেওয়া হবে বলে স্থায়ী কমিটির প্রবীণ এক সদস্য জানান।
বৈঠকটি রাত সাড়ে ৮টায় শুরু হবে-এমন তথ্য জানিয়েছেন খালেদা জিয়ার মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান ।
এদিকে বৈঠকের সম্ভাব্য আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে বিএনপির একজন স্থায়ী কমিটির নেতা জানান, পৌরসভা নির্বাচন, ইউনিয়ন নির্বাচন এবং কাউন্সিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। একজন বিভাগীয় পর্যায়ের সাংগঠনিক জানান, আমাদের মধ্যে আলোচনা ছিল-বাই মার্চ কাউন্সিল সম্পন্ন করা। বড় করে করার চিন্তা মনে হয় নেই। ছোট করে বা ঘরোয়াভাবে করা হতে পারে। এক্ষেত্রে ম্যাডামকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। তিনি হয়তো মহাসচিব নির্বাচন করবেন, স্থায়ী কমিটি পুনর্গঠিত করবেন। পাশাপাশি কয়েকটি উপকমিটি করে নির্বাহী কমিটি গঠনের দায়িত্ব দেওয়া হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সূত্রে জানা গেছে, কাউন্সিল কেন্দ্র করে বিএনপিতে দু-একজন সিনিয়র নেতা আগ্রহী হলেও শেষ পর্যন্ত ফখরুল ইসলাম আলমগীরই মহাসচিব হবেন। দলের একটি অংশ ফখরুলকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে বিভিন্ন প্রচার মাধ্যম কাজে লাগালেও শেষ খালেদা জিয়ার কাছে তার আবেদন আগের চেয়ে বৃদ্ধি হয়েছে।
স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বাইরে এই মুহূর্তে দলে ফুলটাইমার রাজনীতিক নেই। স্থায়ী কমিটির মধ্যে মওদুদ আহমদ, তরিকুল ইসলাম, জমির উদ্দিন সরকারসহ কয়েকজন প্রায় বৃদ্ধ। এ কারণে ফখরুলের বাইরে যোগ্য কেউ নেই। অন্য কেউ হওয়ার কোনও চান্সই দেখি না। দলে তো লোক নাই। থাকলে আমিনুল হক পারতেন। কিন্তু তিনি তো রাজনীতি ছেড়ে ব্যবসায় মনোযোগী হয়েছেন। ফখরুল দীর্ঘসময় ধরে দলের জন্য মাঠে আছেন, কারাগারে থেকেছেন।
ওই সদস্য বলেন, ‘ফখরুলকে ভারপ্রাপ্ত করার পর আমি ম্যাডামকে বলেছি, ভারপ্রাপ্ত করার দরকার কী। এতে অন্যরা সুযোগ নিতে চাইবে। ম্যাডাম বলেছিলেন, সমস্যা কী। আমার হাতেই তো। এটা টিএইচ খানও বলেছিলেন, ভারপ্রাপ্ত করার দরকার কী। এ ছাড়া ফখরুল সাহেব এখন সাধারণ মানুষের কাছে জনপ্রিয়।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দীন সরকার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বৈঠকের আগে তো বলা যাবে না কি নিয়ে হবে বৈঠক। কিছু বিষয় তো থাকেই। সামগ্রিক পরিস্থিতি থাকবে।’
মহাসচিব বিষয়ে তিনি বলেন, এটা ম্যাডামের ব্যাপার। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব শিক্ষিত-গুণী মানুষ। দেখা যাক।
বৈঠক ও মহাসচিব প্রসঙ্গে জানতে চাইলে খালেদা জিয়ার একজন প্রভাবশালী উপদেষ্টা বলেন, বৈঠকে কাউন্সিল, নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হবে এবং ফখরুল বিষয়ে সিদ্ধান্তও হতে পারে। এখন পর্যন্ত জানি যে, তিনিই মহাসচিব হচ্ছেন। তার আচার-আচরণ, ম্যাডামের সঙ্গে তার সম্পর্ক, রাজনীতি বিষয়ে তার স্বচ্ছতা, পরিচ্ছন্ন মানুষ, সব কিছু বিবেচনায় নিয়ে মনে হয় না তাকে বাদ দেওয়া হবে, বরং একমাত্র হতে পারেন।