রিয়ানা তৃণা বেপারী, যুক্তরাজ্য থেকে
ভালোবেসে এক হিন্দু পাত্রকে বিয়ে করবার কারনে সিলেটের মেয়ে সানজিদা তার নিজ পিতার অব্যাহত হুমকির মুখে আটকে পড়েছে যুক্তরাজ্যে। সিলেটের দিরাই নিবাসী আব্দুস জহিরের কন্যা সানজিদা জহির ভালোবেসে বিয়ে করেন ফরিদপুরের ছেলে অরুনাংশু চক্রবর্তীকে। আর বিপত্তি বাঁধে তখনই। বেঁকে বসেন সানজিদার পিতা আব্দুস জহির। মেয়েকে অনেকটা বিক্রি করে দেবার মত করে বিয়ে তড়ি ঘড়ি করে বিয়ে দেবার চেষ্টা করেন একই উপজেলার সামাদ আলীর মেঝ পূত্র কামরান আলীর সাথে। এই কামরান আলী আবার জেলা শিবিরের অন্যতম নেতা ছিলো বলে জানা যায়। এমনকি সিলেটের ব্লগার অনন্ত বিজয় দাসকে হত্যার ব্যাপারে তার বিরুদ্ধে অভিযোগও রয়েছে বলে জানা যায়। আনসার আল ইসলাম নামক একটি জঙ্গী সংগঠনের সাথে এই পরিবারের সংযোগ এলাকাবাসীর মুখে মুখে।
এদিকে সানজিদাকে গত বছরের জানুয়ারীতে জোর করে এই কামরানের সাথে বিয়ে দেবার চেষ্টা করলে সানজিদা বাসা থেকে পালিয়ে যুক্তরাজ্যে পালিয়ে চলে যান। এই ঘটনায় পিতা আব্দুস জহির নানাভাবে সানজিদার বর অরুনাংশুকে হুমকি দিতে থাকে। এমনকি মেয়েকে চুরি করে নিয়ে গেছে ও অর্থ চুরি করেছে মর্মেও অরুণের বিরুদ্ধে আইনী নোটিশ পাঠান এই আব্দুস জহির। পরবর্তীতে ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইনের ১৯(ক) ধারায় একটি মামলাও অরুণের বিরুদ্ধে দায়ের করে বলে জানা যায়।
এই ঘটনায় আমাদের যুক্তরাজ্য প্রতিনিধিকে সানজিদা বলেন, “শুধু অন্য ধর্মের একজন ছেলেকে বিয়ে করেছি বলে আমার উপর যে মানসিক অত্যাচার চলছে এটি মধ্য যুগকেও হার মানায়। আমার নিজের দেশে আমি ফিরতে পারবো না এর থেকে দুঃখের আর কি হতে পারে?”
এই অব্যাহত হুমকি, মামলা ও মানসিক নির্যাতনের ব্যাপারে অরুনাংশু’র কাছে জানতে চাইলে তিনি আমাদের প্রতিনিধিকে বলেন, “শুধু মামলা নয়, আমাকে হুমকি দিয়ে এও বলেছে যে বাংলাদেশের যেখানে পাবে সেখানেই নাকি আমাকে হত্যা করবে। শুধু মাত্র বিয়ে করেছি বলে এই ধরনের হুমকিতে আমি বিষ্মিত ও হতবাক। শুধু যে আমার স্ত্রীর পরিবারই এমন করছে তা নয় বরঙ আমার পরিবার থেকেও এই বিয়ে মেনে নেয়নি। আমাকে মন্দিরে ঘোষনা দিয়ে জাতচ্যুত করেছে। ভালোবাসলে এত বিপদ এই কথা আগে জানতাম না। এই দেশে ঘৃণা করলে ভালো শুধু ভালোবাসলে অপরাধ। আমরা কি মগের মুল্লুকে থাকি?”
এই ব্যাপারে সানজিদার পিতা আব্দুস জহিরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে কথা বলতে রাজি হন নি। শাহপরান থানাতে অস্ত্র মামলার ব্যাপারে তদন্তকারী কর্মকর্তা রবিউল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই মামলা তদন্তাধীন বলে মন্তব্য করতে রাজী হন নি।