ঢাকা মহানগরীর আধুনিকায়নে তার সরকারের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রাজধানীর বস্তিগুলো বহুতল ভবনে প্রতিস্থাপিত হবে, যাতে করে নগরবাসী উন্নত স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে জীবনযাপন করতে পারে।
রোববার সকালে প্যান প্যাসিফিক হোটেল সোনারগাঁওয়ে দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। খবর বাসসের।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজধানীতে কোনো বস্তি থাকবে না। এর স্থলে ২০ তলা করে ভবন গড়ে তোলা হবে। এখন যেমন বস্তিবাসী ভাড়া দিয়ে থাকেন, তেমনি তখন তারা ওসব ভবনেও দৈনিক, সাপ্তাহিক এবং মাসিক ভিত্তিতে ভাড়া দিয়ে বসবাস করবেন।
তিনি বলেন, প্রতিদিন নানা প্রয়োজনে দরিদ্র মানুষকে রাজধানীতে আসতে হয়। আবার আমাদের দৈনন্দিন কাজেও এ শ্রমিক শ্রেণির প্রয়োজন পড়ে। তারা যেন একটু শান্তিতে বসবাস করতে পারে, সে জন্যই তাদের বসবাসের জন্য একটু ভালো পরিবেশের দরকার।
শেখ হাসিনা বলেন, বস্তিবাসী এখন বস্তিতে যে ভাড়া দিচ্ছে, সে ভাড়াতেই এখানে থাকবেন; অবশ্য তাদের ভাড়া দিয়েই থাকতে হবে। দেশের অর্থনীতির উন্নয়ন হচ্ছে, কাজেই তারও যেন সেই ছোঁয়াটা পায় সেটি আমাদের দেখতে হবে।
তিনি বলেন, কেবল অবস্থাসম্পন্নদের জন্যই নয়, আমাদের উন্নয়ন সবার জন্য।
ঢাকার পয়ঃনিষ্কাশনব্যবস্থাকে একই পাইপলাইনে নিয়ে আসতে চীন সরকারের সহযোগিতায় ঢাকা ওয়াসার ২০২৫ সালের মধ্যে বাস্তবায়নাধীন মহাপ্রকল্পের অংশ হিসেবে খিলগাঁও এলাকায় এই দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার প্রকল্প নির্মিত হচ্ছে।
রাজধানীর পয়ঃনিষ্কাশনব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর অংশ হিসেবে রাজধানীতে আরও ৪টি পয়ঃনিষ্কাশনব্যবস্থা গড়ে তোলার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে।
এতে পাগলায় বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতায় দুটি এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের সহযোগিতায় রায়েরবাজার এবং উত্তরায় আরও দুটি পয়ঃশোধনাগার প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে।
অনুষ্ঠানে প্রকল্পসংশ্লিষ্ট একটি ভিডিও উপস্থাপনায় জানানো হয়, তিন হাজার ৩৭৭ কোটি ১৭ লাখ টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্প ২০২০ সালের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে। ২৪ হেক্টর জমির ওপর বাস্তবায়নাধীন এই প্রকল্পে দৈনিক ৫০ কোটি লিটার পয়ঃবর্জ্য পরিশোধনের মাধ্যমে ৫০ লাখ নগরবাসীকে সেবা দেয়া সম্ভব হবে।
এলজিআরডি ও সমবায়মন্ত্রী ইঞ্জি. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. জাফর আহমেদ খান, চীনের রাষ্ট্রদূত ঝাং জুয়ো এবং ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খান বক্তৃতা করেন।
মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ ও হুইপ এবং সরকারের পদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তা, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধি ও আমন্ত্রিত অতিথিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।