প্রত্যাবর্তনটা ভালো হলো না তামিম ইকবালের। প্রায় আড়াই মাস পর গতকাল বিপিএল দিয়ে প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফিরেছেন তিনি। কিন্তু প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে চার বলে মাত্র ৫ রান করেন তিনি। গতকাল ফিরেছেন মাশরাফি মুর্তজাও। বিশ্বকাপের পর গতকালই প্রথম মাঠে নামলেন তিনি। সাড়ে পাঁচ মাস পর ফেরা মাশরাফি প্রত্যাবর্তনও খুব একটা ভালো হয়নি। ব্যাট হাতে ১০ বলে ২ ছক্কায় ১৮ রান করলেও তার মূল কাজ বোলিংয়ে ছিলেন উইকেটশূন্য। দুই তারকার ব্যর্থতার দিনে হেরেছে তাদের দল ঢাকা প্লাটুনও। রাজশাহী রয়্যালস ৯ উইকেটে উড়িয়ে দিয়েছে তাদের। মাশরাফির মতে, দীর্ঘদিন পর মাঠে ফেরায় তার মাঝে কিছুটা জড়তা কাজ করেছে। তার বিশ্বাস, কয়েকটা ম্যাচ গেলেই এ জড়তা কেটে যাবে।
বিশ্বকাপ থেকে ফিরে শ্রীলংকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ খেলে লম্বা বিশ্রাম নিয়েছিলেন তামিম ইকবাল। মূলত ভারত সফরের জন্য নিজেকে সঠিকভাবে প্রস্তুত করার জন্যই এ বিরতি নিয়েছিলেন তারকা এ ওপেনার। ভারতের বিপক্ষে প্রস্তুতির জন্যই অক্টোবরের শুরুতে জাতীয় লিগের একটি ম্যাচেও খেলেছিলেন তিনি। ঢাকা মেট্রোর বিপক্ষে চট্টগ্রাম বিভাগের হয়ে ৩০ ও ৪৬ রানের দুটি ইনিংস খেলেছিলেন। দ্বিতীয় সন্তান জন্মের সময় স্ত্রীর পাশে থাকার জন্য ভারত সফর থেকেও শেষ মুর্হূতে সরে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। গতকাল ফেরার ম্যাচে তার ব্যাটে কোনো ঝলক দেখা যায়নি। দ্বিতীয় ওভারে আবু জায়েদ রাহির বলে চার মারার পরের বলেই ড্রাইভ করতে গিয়ে কাভারে ক্যাচ দিয়ে আসেন তিনি। সে তুলনায় মাশরাফির ইনিংসটা বেশ কার্যকরই ছিল। তার জন্যই শেষ ওভারে কুড়ি রান আসে। এরপর তিন ওভার বোলিং করে উইকেটের দেখা পাননি ডানহাতি এ পেসার। তার বোলিংয়ে তেমন ধারও ছিল না। মাশরাফি অবশ্য দুশ্চিন্তা করছেন না। ম্যাচ শেষে তিনি জানিয়েছেন কয়েকটা ম্যাচ গেলেই সব ঠিক হয়ে যাবে, ‘অনেক দিন পর মাঠে নামলাম, কিছুটা জড়তা তো ছিলই। অনেক দিন পর মাঠে নামলে সবকিছুর সঙ্গে মানিয়ে নিতে কিছুটা সময় তো লাগেই। যে কোনো খেলোয়াড় দীর্ঘদিন বাইরে থাকলে কিছু সমস্যা হয়ই। তবে দু-তিন ম্যাচ গেলেই সব স্বাভাবিক হয়ে আসবে। অনেক দিন বাইরে তো, ছোটখাটো কিছু চোটও থাকে। তবে অতীতেও এগুলো ওভারকাম করেছি। এখনও আশা করি ঠিক হয়ে যাবে।’
তবে তামিম ইকবালকে নিয়ে এসব দুশ্চিন্তা করা উচিত নয় বলেও মনে করছেন মাশরাফি, ‘আমার মনে হয় না তামিমকে নিয়ে বেশি কিছু চিন্তা করার আছে। শেষ বছরও তামিম অধিকাংশ ম্যাচে এমন অবস্থার ভেতর দিয়েই গেছে। কিন্তু এটাও মনে রাখতে হবে, গত আসরে ফাইনালে ম্যাচ জেতানো ইনিংসটি কিন্তু তারই ছিল। দিনের পর দিন তামিম নিজেকে প্রমাণ করে এসেছে।’
গতকালের ম্যাচে হারের জন্য তিনটি রানআউটকে দায়ী করছেন মাশরাফি, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, পুরো দল একসঙ্গে হয়ে খেলা। যেটা আজ মিসিং ছিল। উইকেট ভালো ছিল। সচরাচর মিরপুরের উইকেট এমনটা পাওয়া যায় না। আমরা একটা স্টেজে ১৬০ রান করার মতো অবস্থায় ছিলাম। কিন্তু পরপর দু-তিনটি রানআউটে সে সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়। এখন এটা নিয়ে বড় চিন্তার কোনো কারণ নেই, আবার বড় করে আলোচনারও কিছু নেই।’ গতকালের ম্যাচে ঢাকার ব্যাটিং অর্ডারে কিছুটা ভারসাম্যের অভাব দেখা গেছে। তিন, চার ও পাঁচ নাম্বরে অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানের অভাব চোখে লেগেছে। মাশরাফি অবশ্য এটাকে সমস্যা মনে করছেন না, ‘ব্যালেন্স ঠিক আছে। আমাদের দলে যারা তরুণ আছে তাদের জন্য এটা অনেক বড় একটা সুযোগ। চাপ থাকবে। ঢাকা প্লাটুন প্রত্যাশা করে কমপক্ষে সেমিফাইনাল খেলার। এই পরিস্থিতিতে ব্যাটিং করা ওদের জন্য বড় সুযোগ। বিশেষ করে বিভিন্ন দেশের বোলারদের ওরা হ্যান্ডেল করবে। আমি মনে করি, অধিনায়ক হিসেবে আমি ভাবছি যে, ওরা কতটা সুন্দরভাবে চাপ নিয়ে খেলতে পারে। তারা নিজেরা নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারে।’