বিচারপতি আখতারুজ্জামানের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের এক নিউজ আপডেটে এ তথ্য জানানো হয়, যেখানে আরও বলা হয় যে, সুপ্রিম কোর্টের গণসংযোগ কর্মকর্তা মোঃ শফিকুল ইসলাম এ সম্পর্কিত ঘোষণা দিয়েছেন। এর আগে, গত ৩১ আগস্ট তিনি তার পদত্যাগপত্র সুপ্রিম কোর্টের কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেন।
অভিযোগের জেরেঅত্মে, অনুসন্ধানের জন্য তাকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছিল। এরপর, ১ জুলাই সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের নির্দেশে, বিচারপতি আখতারুজ্জামান সশরীরে হাজির হয়ে তার ব্যাখ্যা প্রদান করেন। সেই ব্যাখ্যা দেওয়ার পর তিনি তার পদত্যাগপত্র প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের কাছে জমা দেন। এরই মাধ্যমে, বাদজে সাক্ষ্যপ্রমানের প্রক্রিয়া শেষ করে, তার পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হয়।
উল্লেখ্য, গত ২৩ মার্চ, রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আখতারুজ্জামানের বিষয়ের পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশনা দেন। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ গত বছরের ১৬ অক্টোবর দুর্নীতি ও স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার সরকারের দোসর হিসেবে বিবেচনা করে ১২ জন বিচারপতিকে ছুটিতে পাঠান। এর মধ্যে বিচারপতি আখতারুজ্জামান অন্যতম। এ ছাড়াও, বিচারপতি নাইমা হায়দার, শেখ হাসান আরিফ, আশীষ রঞ্জন দাস, মোহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার, এস এম মনিরুজ্জামান, আতাউর রহমান খান, শাহেদ নূর উদ্দিন, মো: আকতারুজ্জামান, মো. আমিনুল ইসলাম, এস এম মাসুদ হোসেন দোলন, খিজির হায়াত, ও খোন্দকার দিলীরুজ্জামানকে ছুটিতে রাখা হয়।
তদন্তের মাধ্যমে, সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের নেতৃত্বে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে যাচাই-বাছাই শুরু হয়। এ তদন্তের অংশ হিসেবে, বিচারপতি আখতারুজ্জামানকে তার অভিযোগের ব্যাখ্যা দিতে ডাকা হয়।
গত ২১ আগস্ট, সুপ্রিম কোর্টের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, হাইকোর্ট বিভাগের পাঁচ বিচারপতির বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে, যার মধ্যে একজন হলেন বিচারপতি আখতারুজ্জামান। পরে, ২৬ আগস্ট তার উপর চূড়ান্ত শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। তবে, শুনানির আগেই, ৩১ আগস্ট তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে তার পদত্যাগপত্র পাঠান।
সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর, হাইকোর্ট বিভাগের আরও তিন বিচারপতি পদত্যাগ করেন: সালমা মাসুদ চৌধুরী, কাজী রেজা-উল হক, এবং এ কে এম জহিরুল হক। এরা সকলেরই পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি গ্রহণ করেন গত বছরের ১৯ নভেম্বর। পরে, গত ৩০ জানুয়ারি, বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনেরও পদত্যাগ কার্যকর হয়।
প্রসঙ্গত, বিচারপতি মোঃ আখতারুজ্জামান ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি, ঢাকার বকশীবাজারে কারা অধিদপ্তরের প্যারেড গ্রাউন্ডে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এ, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন। এছাড়া, তারেক রহমানসহ অন্য পাঁচজনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড প্রদান করেন।