রাজধানীর মিরপুরে একটি রাসায়নিক গুদামে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান স্পষ্ট করে বলেছেন, এই মৃত্যুগুলোর জন্য বিষাক্ত গ্যাস বা অন্য কোনো বিষ নয়; বরং আগুনের আগুনে পুড়ে যাওয়াই এ প্রাণহানির কারণ। বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ তথ্য তুলে ধরেন।
তিনি আরও জানান, মরদেহের সংস্পর্শে আসা ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের মাধ্যমে নিহত ব্যক্তিদের তিন-তিনটি দাবি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ইসলামপুরের ১০ জনের মরদেহ শনাক্ত করা হয়েছে।
হাসপাতালের পরিচালক বলেন, নিহত ১৬ জনের মধ্যে নয়জন পুরুষ ও সাতজন নারী রয়েছেন। লাশগুলো হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। সুসময় স্বজনরা এসে মরদেহগুলো শনাক্ত করতে পারেন এবং পুলিশ বা জেলা প্রশাসনের অনুমতি পেলে মরদেহগুলো ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
অন্যদিকে, এ দুর্ঘটনার পরে নিখোঁজদের খুঁজে পাওয়ার জন্য গুদাম ও হাসপাতালের আশপাশে স্বজনদের ভিড় জমে। দেখা গেছে, কেউ কেউ পাথর হয়ে বসে রয়েছেন, কেউ বা অশ্রু সংবরণ করতে পারছেন না। ইতিমধ্যে, স্থানীয় জনগণ ঘটনাস্থল দেখতে ব্যাপক উৎসাহ এবং কৌতুহলে ভিড় জমিয়েছে।
ঘটনাটি ঘটে গত মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায়। মিরপুর শিয়ালবাড়ির টিনশেডের ওই রাসায়নিক গুদামে হঠাৎ আগুন লাগলে দেড় ঘণ্টার মধ্যেই তা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিটের ৭ ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এতে ১৬ জনের মরদেহ উদ্ধার হয়।
ফায়ার সার্ভিসের সূত্র বলছে, ভবনের ছাদ টিনশেড থাকায় অনেক কর্মী বের হতে পারেননি। গুদামে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড, ব্লিচিং পাউডারসহ সাত থেকে আট ধরনের রাসায়নিক দ্রব্য মজুত ছিল। আগুন নেভানোর পর এসব রাসায়নিকের বিক্রিয়ার ফলস্বরূপ বিষাক্ত ক্লোরিন গ্যাস নির্গত হয়। বুধবার সকালে আশপাশের গার্মেন্টসের কর্মীরা কাজে আসলে এ ধোঁয়ায় তারা অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন।