সত্যজিৎ রায়ের কালজয়ী ছবি পথের পাঁচালীর হারিয়ে যাওয়া প্রথম চিত্রনাট্য বা স্কেচবুকের খোঁজ পাওয়া গেছে। ভারতীয় চলচ্চিত্র ইতিহাসের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া এই ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৫৫ সালের ২৬ আগস্ট। সেই চলচ্চিত্রের হারানো স্কেচবুকের ৫৮ পৃষ্ঠার একটি ডিজিটালাইজড কপি হাতে পেয়েছেন সত্যজিৎ রায়ের ছেলে চলচ্চিত্রকার সন্দীপ রায়।
আগামী ২ মে সত্যজিৎ রায়ের ৯৫তম জন্মদিনে ওই স্কেচসহ একটি বই বের করবেন সন্দীপ রায়।
১৯৫০ সালে বিলেত থেকে ফেরার পর সত্যজিৎ রায় ঘোষণা করেছিলেন, তিনি বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পথের পাঁচালী নিয়ে একটি ছবি নির্মাণ করবেন। এই লক্ষ্য নিয়ে সত্যজিৎ রায় সেদিন ছবিটি নির্মাণের জন্য গোটা কাহিনিকেই ফ্রেমবন্দী করেছিলেন কমিকসের ধাঁচে আঁকা নানা রঙের ছবিতে। ওই ছবিগুলোর নিচে দু-তিনটি করে সংলাপও লিখেছিলেন তিনি। প্রতিটি পাতায় ছিল চার থেকে ছয়টি ছবি। এটাই ছিল পথের পাঁচালীর প্রথম চিত্রনাট্য। এরপর এই স্কেচবুক নিয়ে তিনি অনেক প্রযোজকের শরণাপন্ন হয়েছিলেন।
ছবি মুক্তির পর সত্যজিৎ রায়কে তাঁর ওই স্কেচবুকটি নিজেদের সংগ্রহে রাখার অনুরোধ করে প্যারিসের বিশ্বখ্যাত জাদুঘর ‘সিনেমাথেক ফ্রাঁসেজ’। সেই অনুরোধে সাড়া দিয়ে সত্যজিৎ তাঁর স্কেচবুকটি পাঠিয়ে দেন ওই জাদুঘরে। মৃত্যুর কয়েক মাস আগে সত্যজিৎ রায় অসুস্থ অবস্থায় দেখতে চেয়েছিলেন তাঁর স্কেচ করা সেই খাতাটি। কিন্তু প্যারিসের ওই জাদুঘর জানিয়ে দেয়, স্কেচবুকটি তারা হারিয়ে ফেলেছে। একই সঙ্গে ওই জাদুঘরে সংরক্ষিত সত্যজিৎ রায়ের অপুর সংসার ছবির চিত্রনাট্যটিও হারিয়ে গেছে সেখান থেকে।
তবে অন্য একটি সূত্র থেকে সত্যজিৎ রায়ের ছেলে সন্দীপ রায়ের হাতে চলে আসে পথের পাঁচালীর সেই স্কেচবুকের ডিজিটালাইজড কপি। এখন সেটি আছে কলকাতার সত্যজিৎ রায় আর্কাইভসে। সেই আর্কাইভের কর্ণধার সন্দীপ রায়।