একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পর এবার ক্ষমতায় গেলে প্রকৃত সংখ্যা নিরূপণের ইঙ্গিত দিলো বিএনপি। রবিবার দুপুরে নয়া পল্টনে ভাসানী মিলনায়তনে কৃষক দলের আলোচনা সভায় এ ইঙ্গিত দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে প্রকৃত শহীদদের সংখ্যা বের করার জন্য তৎকালীন আইজিপি আব্দুর রহিমের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু ৭৪ সালে সেই কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছিল। শহীদদের সংখ্যা নিয়ে আমরা কেন অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকবো? কেন আমরা নিশ্চিত হতে পারবো না? বিএনপি ক্ষমতায় গেলে অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করা হবে।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়েরের প্রতিবাদে এ সভার আয়োজন করে কৃষক দল। এতে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান খান দুদু।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক ও মতবিরোধ রয়েছে, এটা তো মিথ্যা না। কারণ, দেশ স্বাধীনের কয়েকদিন পরেই মরহুম শেখ মুজিবুর রহমান নির্দিষ্ট করেই বললেন, ‘ত্রিশ লক্ষ লোক শহীদ হয়েছেন।’ স্বাধীনতার কয়েক দিনের মধ্যেই কে কখন হিসাব কিংবা অনুসন্ধান করেছেন যে, ত্রিশ লাখ লোক মারা গেছে।’
তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া বলেছেন- মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক আছে।’ আমিও বলবো- বিতর্ক আছে, একশবার বিতর্ক আছে। তাই বলে শহীদদের ছোট ও অসম্মান করা করা হচ্ছে, এটা সঠিক নয়। বরং যারা আমাদের মাতৃভূমির জন্য রক্ত দিয়েছেন, ত্যাগ স্বীকার করেছেন, জীবন দিয়েছেন, তাদের নাম বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা হোক।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ যারা করেছেন তাদেরকে ভাতা দেওয়া হচ্ছে, বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, ছেলে-মেয়েদের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এতে আমরা খুশি। কিন্তু যারা শহীদ হয়েছেন তাদের কোনও প্রাপ্য নাই? এই দেশের জন্য তাদের কোনও অবদান নাই? কেন তাদের পরিবার-পরিজনরা এই মর্যাদা পাবেন না? কেন তাদের নাম ইতিহাসে লিপিবদ্ধ হবে না?’
নজরুল ইসলাম বলেন, ‘শহীদদের প্রতি রাষ্ট্রের যে দায়িত্ব ছিল এতদিনের সরকারগুলো তা ঠিকভাবে পালন করেনি। এজন্য অভিযোগ তাদের সবার ওপরই পড়তে পারে। এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়ার জন্যই খালেদা জিয়া কথা বলেছেন। কিন্তু সরকার সে দায়িত্ব পালন না করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নামে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দিয়েছে। বিএনপি আবার দায়িত্বে এলে নিশ্চয়ই এই অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করা হবে।