‘মাদকদ্রব্য নির্মূলের নামে সরকার বিরোধী দল নির্মূল করতে চায়’ অভিযোগ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, ‘কোনও সরকার মাদক নির্মূলের নামে মানুষ হত্যার হুকুম দিতে পারে না। আমরা প্রতিটি হত্যার অনুসন্ধান করবো।’ শুক্রবার (৮ জুন) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ইয়ুথ ফোরাম আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।
মওদুদ আহমদ বলেন, ‘মাদকদ্রব্য নির্মূলের নামে বিরোধী দল নির্মূল করতে চায় এই সরকার। আমাদের অনেক নেতাকর্মীর নাম তাদের কথিত তালিকায় তালিকাভুক্ত করা শুরু করেছে। কোনও দায়িত্বশীল সভ্য সরকার এভাবে মানুষকে হত্যা করার হুকুম দিতে পারে না। এই সরকার তা দিয়ে বিরাট একটি অপরাধ করেছে। আমরা প্রতিটি হত্যা অনুসন্ধান করবো। প্রতিটি হত্যার বিচার করা হবে এই বাংলাদেশে।’
‘কে মাদক ব্যবসায়ী এটা কে নির্ধারণ করে দিয়েছে?’ এমন প্রশ্ন তুলে মওদুদ বলেন, ‘এই যে তারা বলে বন্দুকযুদ্ধে মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে, সে যে ব্যবসায়ী এটা কে নির্ধারণ করেছে? এই যে একটা তরুণ ছেলে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে কিংবা গ্রামের এক কৃষককে বন্দুকযুদ্ধে মেরে ফেলা হলো, সে যে মাদক ব্যবসায়ী এটা কে নির্ধারণ করছে? কোনও আদালত সিদ্ধান্ত দিয়েছে? এই বিনা বিচারে হত্যা অনেকটা গণহত্যার মতো। ঠান্ডামাথায় তাদের হত্যা করা হলো। আমার মাদক ব্যবসায়ীদের প্রতি কোনও দুর্বলতা নেই। আমি চাই সমগ্র দেশ মাদকমুক্ত হোক। সেটা আমরা সবাই চাই। কিন্তু এই ৯ বছরে সরকার কী করেছে সেটাও জানতে চাই।’
২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটকে বড় একটি সুন্দর নীল বেলুনের সঙ্গে তুলনা করে মওদুদ বলেন, ‘এই বাজেটের ভেতরটা শূন্য। একটা সুই দিয়ে গুঁতা দিলে ফেটে যাবে। ইট ইজ এ বিগ বিউটিফুল ব্লু বেলুন, যার ভেতরে কিচ্ছু নাই, শূন্য। এটা একটি গতানুগতিক বাজেট। নির্বাচনকে সামনে রেখে এই বাজেট দেওয়া হয়েছে। এই বাজেট সম্পর্কে মন্তব্য করার আগে আমার প্রশ্ন এই সরকারের বৈধতা আছে কিনা। এই সরকারের বাজেট দেওয়ার অধিকার আছে কিনা। গত ৯ বছরের শাসনে জনগণকে যা কষ্ট দিয়েছেন সেটা ইতিহাস একদিন রায় দেবে। মানুষ এই কষ্টগুলো ভুলে নাই। বিগত বছরে যে পরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে, ব্যাংক লুট হয়েছে এগুলো নিরসন করার কোনও নির্দেশনা এই বাজেটে নেই।’
‘বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না’ দাবি করে মওদুদ বলেন, ‘এতদিন ইসি বলে আসছে সেনা মোতায়েন করা হবে না। হঠাৎ করে তারা এখন বলছে সেনা মোতায়েন হবে জাতীয় নির্বাচনে। হঠাৎ করে কেন বললেন সেটাও একটা প্রশ্ন। তবে সেনা মোতায়েন করলে সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিতে হবে। শুধু স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে রাখলে হবে না। যাতে জনগণ নির্বাচনের দিন নির্ভয়ে ভোট প্রদান করতে পারে সেই পরিবেশ রাখতে হবে।’