কয়েক বছর আগপর্যন্ত ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডে ১০০ মিটার স্প্রিন্ট মানেই ছিল মেসবাহ আহমেদের দাপট। জাতীয় মিট ও সামার মিটে একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল বাগেরহাটের এ অ্যাথলেটের। দেশের দ্রুততম মানব ছিলেন টানা সাত বছর। খেলেছিলেন ২০১৬ রিও অলিম্পিকেও। তবে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ক্রীড়া আসরেও পাঁ রাখা মেসবাহ এখন নিজের প্রিয় ইভেন্ট ১০০ মিটারের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। তিন বছর ধরে দ্রুততম মানব হতে পারছেন না তিনি। রেস থেকে ছিটকে পড়া বাংলাদেশ নৌবাহিনীর এ অ্যাথলেটের ১০০ মিটারের প্রতি মন টানে না। তাই সামনে আর এই ইভেন্ট খেলতে চান না মেসবাহ, ‘গত তিনটি আসরেই আমি ব্যর্থ। নিজের প্রিয় ইভেন্টে মেলে ধরতে পারছি না। গত বছরের জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ ও সামার মিট এবং চলতি বছরের জানুয়ারিতে চট্টগ্রামে জাতীয় মিট- টানা তিনটি আসরে হেরে গেছি। এটি আমার জন্য খুবই কষ্টের। তবে তৃপ্তি এটুকু যে, আমি না পারলেও নতুনরা তো উঠে আসছে। এখন আর ১০০ মিটারের প্রতি আগ্রহ নেই। হয়তো আমি এই ইভেন্টে আর খেলব না। ভাবছি ভবিষ্যতে চার গুণিতক একশ’ মিটার রিলেতে খেলব। আর ফাঁকে ফাঁকে ত্রিপল জাম্পে লড়ব। এ দুটি ইভেন্টেই এখন মনোযোগ দেব।’
অথচ দেশের অ্যাথলেটিকসে একসময় আধিপত্য ছিল শিরিন আক্তার ও মেসবাহ আহমেদের। নৌবাহিনীর এই দুই অ্যাথলেট অনেক রেকর্ড গড়েছেন। শিরিন দ্রুততম মানবীর খেতাব ধরে রেখেছেন। কিন্তু সাতবার দ্রুততম মানব হওয়া মেসবাহ অনেক পেছনে পড়ে গেছেন। পুরোনো সেই স্মৃতিগুলো মনে করে বড় নিশ্বাস ফেললেন মেসবাহ, ‘সুখকর সেই দিনগুলোর কথা সবসময় মনে পড়ে। ২০১৩ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত জাতীয় মিট ও সামার মিট মিলিয়ে সাতবার দ্রুততম মানব হয়েছিলাম। কতইনা রঙিন ছিল সেই দিনগুলো। অতীতের সাফল্যগুলো মনে পড়লে যেমন আনন্দ পাই, তেমনি বর্তমানের সঙ্গে তুলনা করলে কষ্ট লাগে।’
করোনাভাইরাসের কারণে সব খেলা বন্ধ। ছুটিতে বাড়িতে চলে গেছেন অ্যাথলেটরা। তবে বিশেষ ছুটির এই দিনগুলোতে বাড়িতে না গিয়ে শরীর ফিট রাখার জন্য নৌবাহিনীর কোয়ার্টারে থেকে লড়াই করছেন মেসবাহ। প্রতিদিন বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে তার। খেলা না থাকলেও ফিটনেস ধরে রাখার চেষ্টা করছেন এ অলিম্পিয়ান, ‘এখন তো পুরোদমে অনুশীলন করার অবস্থা নেই। তাই ওয়েট ট্রেনিং করছি। শরীরের ফিটনেস ধরে রাখার চেষ্টা করছি।’