করোনাভাইরাসের কারণে গত মার্চে বন্ধ হয়ে যাওয়া ঘরোয়া ফুটবল আর চালু হয়নি। বৈশ্বিক মহামারির প্রার্দুভাব বেড়ে যাওয়ায় শেষ পর্যন্ত লিগ বাতিল করেছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। লিগ বাতিল হওয়ায় ক্লাবের মতো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ফুটবলাররাও। জাতীয় দলের খেলোয়াড় ছাড়া বেশিরভাগই ক্লাব থেকে ২০ ভাগের বেশি অর্থ পাননি। আর চার মাসেরও বেশি সময় ধরে ঘরবন্দি থাকা ফুটবলাররা হাঁপিয়ে উঠেছেন। মাঠে ফিরতে ব্যাকুল হয়ে গেছেন মামুনুল ইসলাম-তপু বর্মণরা। কবে নাগাদ ফুটবল মৌসুম শুরু হবে এবং ক্লাবের কাছে পাওনা টাকা কীভাবে পাবে, সেসব নিয়ে গতকাল বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করেন পেশাদার লিগে খেলা ২৭ জন ফুটবলার। মাঠে দ্রুত লিগ ফেরানোর দাবি জানিয়ে বাফুফেকে চিঠি দিয়েছেন মামুনুলরা।
তপু বর্মণ, বিশ্বনাথ ঘোষ, আশরাফুল ইসলাম রানা, মামুনুলসহ আরও কয়েকজন ফুটবলারের সঙ্গে এর আগেও বৈঠক করেছিলেন সালাউদ্দিন। সেই বৈঠকেও ফুটবলাররা লিগ, ক্লাবের কাছে পাওনা এবং জাতীয় দলের ক্যাম্প কবে শুরু হবে তা জানতে চেয়েছিলেন। তখন কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পাননি বলে শনিবার আবারও বাফুফে সভাপতির দ্বারস্থ হয়েছেন ফুটবলাররা। বৈঠক শেষে নিজেদের দাবি-দাওয়া নিয়ে অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার মামুনুল ইসলাম মামুন বলেন, ‘আমি আবাহনী ক্লাবে খেলি। ক্লাবের কর্তাদের সঙ্গে আমার যোগাযোগ আছে। পাওনা নিয়ে তাদের সঙ্গে কথাও হচ্ছে। কিন্তু এখন মৌসুম কবে শুরু হবে সেটা তো আমরা জানি না। এখন পাইওনিয়ার থেকে শুরু হবে প্রিমিয়ার লিগ কবে নাগাদ শুরু হবে, আমাদের চুক্তিসহ আরও কয়েকটি দাবি-দাওয়া নিয়ে বাফুফের সর্বোচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিদের সঙ্গে আমরা বসেছি। আমাদের দাবি-দাওয়াগুলো লিখে একটা চিঠি জমা দিয়েছি। যদি ওনারা সমাধনা না করতে পারেন, তাহলে আমরা খেলোয়াড়রা চিন্তা করব যে, আমরা কী করতে পারি।’ খেলোয়াড়দের দাবি-দাওয়া নিয়ে বাফুফে সভাপতি সালাউদ্দিন বলেন, ‘আমরা খেলোয়াড়দের দাবি-দাওয়া শুনেছি। ক্লাবগুলোর কাছে তাদের বকেয়া নিয়ে আমরা বসব। তাদের পাওনা নিয়ে আমরাও উদ্বিগ্ন। আশা করি খুব দ্রুতই এটার একটা সুরাহা করতে পারব।’ মাঠে ফুটবল ফেরানো নিয়ে বাফুফে সভাপতি বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে এখন সবকিছুই বন্ধ। বৈশ্বিক মহামারির জন্য আমরা প্রিমিয়ার লিগসহ সব খেলা বাতিল করেছি। এখন নতুন মৌসুম কবে নাগাদ শুরু করা যায় তা নিয়ে আমাদের পেশাদার লিগ কমিটি বসবে। খেলা নেই বলে ফুটবলারদের মতো আমরাও চিন্তিত। এ সময় তারা ঘরে বসে থাকলে ফিটনেস লেভেলটাও কমে যাবে। এর সবকিছু নিয়েই আমরা ভাবছি।’
৮ অক্টোবর আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে পুনরায় শুরু হবে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব। আগস্টের শেষ দিকে শুরু হওয়ার কথা জাতীয় দলের ক্যাম্প। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ঘরের মাঠে তিনটি ম্যাচের জন্য ফুটবলারদের আইসোলেশন সেন্টারের জন্য বাফুফে ভবন, ফারস হোটেল, বিকেএসপি এবং গাজীপুরের সারাহ রিসোর্টকে মাথায় রেখেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। তবে গতকালও অনুশীলন ভেন্যু চূড়ান্ত করতে পারেনি তারা। ভেন্যু চূড়ান্ত না করলেও বাছাই পর্বেও ম্যাচ নিয়ে ফুটবলারদের উপদেশ দিয়েছেন সালাউদ্দিন, ‘তোমাদের সামনে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের ম্যাচ আছে এবং গোটা দেশ তোমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। আরেকটা জিনিস, যেটা আমি না বলে পারি না যে, তোমাদের নিয়ে অনেক কথাবার্তা হচ্ছে পারফরম্যান্স নিয়ে। আমি এটা নিয়ে ভাবছি না। আমি তোমাদের বলতে চাচ্ছি, ৮ তারিখ তোমাদের প্রথম ম্যাচ। এ ম্যাচটি তোমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে তোমাদের ফিটনেস ধরে রাখাটা খুবই জরুরি।’