আফগানিস্তানে চলমান দীর্ঘ যুদ্ধের অবসানে তালেবান, আফগান সরকার ও সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক পক্ষগুলোকে নিয়ে রাশিয়ার উদ্যোগে এক ঐতিহাসিক শান্তি আলোচনা শুরু হয়েছে। রাশিয়াতে এই শান্তি আলোচনা চলছে। তালেবান সশস্ত্র গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে এই প্রথম এমন শান্তি আলোচনায় অংশগ্রহণ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এখবর জানিয়েছে।
শান্তি আলোচনার উদ্বোধনে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, তালেবান ও আফগানিস্তানের শান্তি পরিষদের আলোচনায় উপস্থিতি উভয় পক্ষের মধ্যে সরাসরি আলোচনার পথ সুগম করবে।
শান্তি আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি দেশ অংশগ্রহণ করছে। মস্কোতে শান্তি আলোচনায় অংশ নিচ্ছে চীন, পাকিস্তান, ইরান, ভারত ও মধ্য এশিয়ার কয়েকটি দেশ।
আফগানিস্তানের শান্তি পরিষদের মুখপাত্র জানান, তালেবানের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার বিষয় নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। আমরা তাদেরকে বলেছি স্থান ও আলোচনার সময় জানাতে।
তালেবানদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই আলোচনা কোনও নির্দিষ্ট পক্ষের সঙ্গে দরকষাকষি নয়। পশ্চিমা ও আফগান সরকার মস্কো আলোচনাকে সন্দেহের চোখে দেখছে। তাদের আশঙ্কা এর মধ্য দিয়ে চলমান অন্যান্য শান্তি উদ্যোগ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
তালেবানরা এই প্রথম কোনও শান্তি আলোচনায় অংশ নিচ্ছে। এই আলোচনায় আঞ্চলিক শক্তিগুলো অংশ নেওয়ার ফলে তাৎপর্যও বেড়েছে।
সম্মেলনস্থল থেকে পাঠানো ছবিতে দেখা গেছে তালেবান নেতারা পাকিস্তান ও চীনসহ অন্য দেশগুলোর প্রতিনিধিদের সাথে সাক্ষাৎ করছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এর আগে রাশিয়ার উদ্যোগে শুরু হওয়া এই শান্তি আলোচনার প্রক্রিয়াকে প্রত্যাখ্যান করেছিল। তারা তালেবানের সঙ্গে নিজস্ব উদ্যোগে সরাসরি আলোচনা চালাচ্ছিল। সেই যুক্তরাষ্ট্রও এ সম্মেলনে দূতাবাসের একজন কর্মকর্তাকে পাঠিয়েছে। এছাড়া তালেবানের সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রশ্নে ভারতের অবস্থানেও পরিবর্তন ঘটেছে। নয়া দিল্লি অতীতে তালেবানের সঙ্গে শান্তি আলোচনার বিরোধী ছিল। কিন্তু এই আলোচনায় ভারত থেকে একটি ‘অনানুষ্ঠানিক’ প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছে। প্রতিনিধি দলে দুজন সাবেক ভারতীয় কূটনীতিকও আছেন।
বিবিসির বিশ্লেষক জিল ম্যাকগিভারিং জানান, এ থেকে শিগগিরই কোনও ফল আসবে বলে কেউ আশা করছেন না। কিন্তু তালেবান ও আফগান সরকার এবং তালেবানের প্রতিনিধিরা যে একটি সম্মেলন কক্ষে শান্তি আলোচনার জন্য বসেছেন, এটাই আসল তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা।